রামায়ণের আদিকাণ্ডের সহজ গল্প
অনেক বছর আগে অযোধ্যা নামে এক সুন্দর রাজ্য ছিল। সেখানে রাজা দশরথ রাজত্ব করতেন। তিনি ছিলেন দয়ালু ও ন্যায়বান। তাঁর তিনজন রানি ছিলেন— কৌশল্যা, কৈকেয়ী ও সুমিত্রা। কিন্তু তাঁর কোনো সন্তান ছিল না। তাই তিনি খুব দুঃখী ছিলেন।
একদিন রাজা দশরথ যজ্ঞ করলেন, যাতে তিনি ভালো সন্তান পান। যজ্ঞ শেষ হলে, আগুন থেকে একজন দেবতা বেরিয়ে এলেন এবং রাজার হাতে এক পাত্র ভোগ্য প্রসাদ দিলেন। তিনি বললেন, “এই প্রসাদ রানিদের খাওয়াও। তাঁদের গর্ভে দেবসমান সন্তান জন্ম নেবে।”
রাজা দশরথ সেই প্রসাদ রানিদের ভাগ করে দিলেন। কিছুদিন পর কৌশল্যার গর্ভে জন্ম নিলেন শ্রীরাম, কৈকেয়ীর গর্ভে ভরত, এবং সুমিত্রার গর্ভে লক্ষ্মণ ও শত্রুঘ্ন।
চার ভাই একসঙ্গে বড়ো হতে লাগল। তারা সব সময় একসঙ্গে খেলত, শিখত আর একে-অপরকে খুব ভালোবাসত। রাম ছিলেন সবার বড়ো, খুব শান্ত, বুদ্ধিমান ও দয়ালু। লক্ষ্মণ সব সময় রামের পাশে থাকত, তাঁকে খুব ভালোবাসত।
একদিন তারা ঋষি বিশ্বামিত্রের সঙ্গে বনভূমিতে যাত্রা করল। সেখানে দানবদের থেকে ঋষিদের রক্ষা করল। রাম ও লক্ষ্মণ খুব সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করে সব দানবদের হারাল।
এরপর তারা জনকপুর নামে এক রাজ্যে গেল। সেখানে ছিল রাজা জনকের কন্যা— সীতা। এক বিশাল ধনুক ভাঙার প্রতিযোগিতা হয় সীতার স্বয়ম্বর সভায়। অনেক রাজা চেষ্টা করেও ধনুক তুলতে পারেনি। কিন্তু রাম সেই ধনুক ভেঙে দিলেন। সীতার সঙ্গে বিয়ে হল রামের।
তারপর চার ভাইয়েরও বিয়ে হল। রাম-সীতা, লক্ষ্মণ-উর্মিলা, ভরত-মাণ্ডবী, ও শত্রুঘ্ন-শ্রুতকীর্তি সুখে সংসার করতে লাগল।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
এইভাবে শেষ হয় আদিকাণ্ড বা বালকাণ্ডের গল্প। এরপর শুরু হয় রামের বনবাসের গল্প— যেটা হয় অযোধ্যাকাণ্ডে।
0 মন্তব্যসমূহ